বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট ১৪ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবসকে সরকারি ছুটি ঘোষণার দাবি করেছে।


আজ সকালে শহীদ বুদ্ধিজীবি কবর স্থানে ১৯৭১ সালের ১৪ ই ডিসেম্বরের শহীদ বুদ্ধিজীবিদের পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে এই দাবি করেন মুক্তিজোটের সংগঠন প্রধান আবু লায়েস মুন্না। তিনি সাংবাদিকদের আরও বলেন তারা সাংগঠনিক ভাবে ২০১৭ সাল থেকে এই দাবি করে আসছেন।


পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর জাতিকে মেধাহীন করার জন্য এ নৃশংস গণহত্যা পরিকল্পনার অংশ ছিল। তাই আমাদের দেশের বর্তমান প্রজন্ম যেন এ স্মৃতি ভুলে না যায় সে জন্য পাঠ্য পুস্তকে ৭১ এ বুদ্ধিজীবি হত্যাকাণ্ডের ইতিহাসকে সংযুক্ত করার কথাও বলেন মুক্তিজোটের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহজামাল আমিরুল।


মুক্তিজোটের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য (প্রচার) শরিফ মোঃ বেদুইন হায়দার লিও স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানান হয় ১৯৭১ সালে বুদ্ধিজীবী হত্যার পৈশাচিকতা এ দেশ কখনও ভুলবে না, তাই অর্ধ শতাব্দী যাবৎ সর্বস্তরের মানুষ ১৪ই ডিসেম্বর রাস্তায় নেমে আসে। কেবল রায়ের বাজার বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নয় বরং সে শোকের মাতম কালো ব্যান্ডেজ- হয়ে সমগ্র দেশজুড়ে সবার বুকে বুকে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও অনতিকাল পরেই সে শোক অশ্রু-ক্রোধ ও অর্জনের স্মারক হিসেবে ‘১৬ই ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস’ এর আনন্দ হয়ে ফিরে আসে, তবুও বেদনাটুকু যেন রয়েই যায়; অতঃপর অসংখ্য মৃত্যু ও রক্তদামে অর্জিত লাল-সবুজের সার্বভৌম নিশানকে সবাই স্যালুট করে- অশ্রু মুছে। এভাবে ১৪ই ডিসেম্বর হয়ে সব শহীদানের সওগাত আমার পতাকায় ভাসে।


পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী দ্বারা নৃশংস গণহত্যার সাথে বেছে বেছে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা কেবল তাদের নারকীয় পৈশাচিকতার নতুন মাত্রা ভাবলে ভুল হবে বরং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ বা আমাদের বিজয় অবধারিত জেনেই তা ঘটানো হয়েছিল, যা সন্দেহাতীতভাবে ভবিষ্যৎ জাতীয় জীবন প্রাসঙ্গিকতায় দেশ ও রাষ্ট্র বিরোধী জঘণ্য পরিকল্পনাকেই নিশ্চিত করে।


এক্ষেত্রে, তৎকালীন রাষ্ট্রশক্তির সংশ্লিষ্টতাতেই তা ঘটানো হয়েছিল বিধায় তার প্রত্যুত্তরেও ন্যায়ত অনিবার্য হয়ে ওঠে রাষ্ট্রীয় ভূমিকা এবং সেটা কোন ব্যক্তিবিশেষের ক্ষেত্রে নয় বরং সামষ্টিক ক্ষেত্রে ঘটেছিল বলেই- এটা কেবল মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত শ্রদ্ধা বা রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দানের বিষয় নয়, বরং উত্তর প্রজন্মের স্বার্থে তা রাষ্ট্রীয় দায়ীত্বের অন্তর্গত। তাই এ দিনটিকে যদি রাষ্ট্রীকতা দ্বারা (রাষ্ট্রীয় ছুটি) নির্দিষ্ট না করা হয় তবে তা হবে রাষ্ট্রকৃত স্মৃতিহত্যার অপরাধ। অর্থাৎ “স্মৃতিহত্যা গণহত্যার মতই জঘণ্য!!


স্মর্তব্য, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ ইতোমধ্যে অর্ধশত বছর পেরিয়ে এসেছে- যথারীতি রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বে এ দেশ ও তার মানুষই ছিল; তবুও উত্তর প্রজন্ম জানে না ১৪ই ডিসেম্বর কী, কেন, কিভাবে, কখন, কোথায় ঘটেছিল!


বিশেষত, জাতীয় একটি দিন হিসেবে যৌক্তিকভাবেই তা যে রাষ্ট্রকৃত বা প্রাতিষ্ঠানিকতার শর্তকে অনিবার্য করে তোলে সেটাও এত বছরে আমাদের বোধগম্য হচ্ছেনা- এটা সদ্য স্বাধীন দেশ ও তার জাতীয় জীবনের প্রত্যুষে সেই সূর্য হারানোর আঁধার পরিণতি নয় কি?


অতএব, সংগত কারণেই অবিলম্বে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসকে রাষ্ট্রীয় ছুটি ঘোষণা করা হোক।”


শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিজোটের সহ-সভাপতি-মো: আমানউল্লাহ আমান, আক্তার হোসেন- কার্যনির্বাহী সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি ও ঢাকা মহানগরের রূপনগর ও পল্লবী থানার সভাপতিসহ মহানগরের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।


আমারবাঙলা/ ইউকে



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *