উপদেষ্টা পরিষদে কতজন থাকবেন; উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো হবে কিনা- এসব বিষয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ের প্রয়োজন দেখছেন না বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।


তার ভাষ্য, উপদেষ্টা কতজন হবেন তার যেহেতু সুনির্দিষ্ট নিয়ম নেই, সেক্ষেত্রে এটা তারা প্রয়োজন অনুযায়ী করবেন।


আজ বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে ঠাকুরগাঁওয়ে কালিবাড়িস্থ নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।


মির্জা ফখরুল বলেন, অনেক সময় দেখা যায়, প্রয়োজন অনুযায়ী ৪০ থেকে ৫২ জনকে নিয়েও (অন্তর্বর্তী বা তত্ত্বাবধায়ক) সরকার হয়ে থাকে। এখন পর্যন্ত তারা ২১ জনকে (উপদেষ্টা) করেছেন। এত বড় একটা দেশ পরিচালনার জন্য এটি হতেই পারে। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয় দরকার নেই।


তবে তারা প্রয়োজন মনে করলে সমন্বয় করতে পারেন। আর তারা কাকে উপদেষ্টা বানাবেন বা বানাবেন না- এটা সম্পূর্ণরুপে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহম্মদ ইউনুসের বিষয়। তবে নির্দিষ্ট বিধান না থাকলেও উপদেষ্টা হিসেবে যাদের নেবেন, তারা যাতে বিতর্কিত না হন, সেদিকে খেয়াল রাখতে আমি অনুরোধ করব-যোগ কারেন তিনি।


আওয়ামী লীগ নিয়ে বিএনপির কোনো মাথাব্যাথা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের চিন্তা হচ্ছে আগামী নির্বাচন নিয়ে। কারণ বর্তমানে যে অন্তবর্তীকালীন সরকার আছে, তারা এখন পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে কোনো রোডম্যাপ দেয়নি। তারা নির্বাচনি ব্যবস্থাকে সংস্কার করার জন্য একটি কমিটি করেছে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে আমাদের চিঠিও দিয়েছে। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। এ নিয়ে আমরা খুব শিগগিরই আমাদের মতামত দেব।


বাংলাদেশে বর্তমান প্রক্ষাপটে সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটি প্রয়োজন সেটি হলো একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন বলে উল্লেখ করেন তিনি।


বিএনপির মহাসচিব বলেন, তার আগে নির্বাচনি ব্যবস্থাপকে নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত করা, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা- এ বিষয়গুলো আমরা বলেছি। দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা এবং সব কিছুর জন্য একটি নির্বাচিত সরকার, নির্বাচিত পার্লামেন্ট অত্যন্ত জরুরি। সে কথাটিই আমরা বারবার করে বলছি।


এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ বা আওয়ামীলীগ যে কাজটা ভালভাবে করেছে, সেটা হলো জাতিকে বিভক্ত করা। এই বিভক্তি দূর করে আমরা একটা ঐক্যবদ্ধ জাতি চাই। একটি গণতান্ত্রিক দেশে মতামত ভিন্ন থাকতেই পারে, কিন্তু কতগুলো মৌলিক বিষয়ে ঐক্য থাকবে। এর মধ্যে রয়েছে দেশের স্বাধীনতা-সার্বোভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার। সেই ঐক্য রাখতে আমরা চেষ্টা করেছি এবং সফলও হয়েছি। এ আন্দোলনকে বেগবান করতে আমরা ৬৩টি দল আন্দোলন করেছি।


অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, ১৭ বছরের একটা জঞ্জাল সরানো ১৭ দিনে সম্ভব না, ১৭ মাসেও না। এর জন্য আপনাদের যারা আছেন তাদের দায়িত্ব কম। যখন একটি গণতান্ত্রিক সরকার আসবে তখন সেই পার্লামেন্ট এই কাজগুলো করবে। এ (বর্তমান) সরকারের মূল দায়িত্ব হবে, নির্বাচনের জন্য একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা। সকলেই যেন ভোটে অংশগ্রহণ করে ভোট দিতে পারে। পাশাপাশি নির্বাচন পরিচালনার জায়গাগুলোতে নিরপেক্ষ লোকজন বসানো, বিচার বিভাগকে নিরপেক্ষ করা ও অ্যাডমিনিস্ট্রেশন নিরপেক্ষ করা।


এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র মির্জা ফয়সল আমীন, সাবেক সংসদ সদস্য মো. জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আল মামুন আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম শরিফ, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. আব্দুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিন, জেলা যুবদলের সভাপতি চৌধুরী মাহেবুল্লাহ আবু নুরসহ জেলা বিএনপি ও এর সহযোগি অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতারা।


.


আমার বাঙলা/এসএইচ



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *